পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য/ প্ল্যাঙ্কটন সৃষ্টি না হওয়ার কিছু কারণ ও প্রতিকার
১. যে সমস্ত পুকুরে ঝিনুক বা শামুক এর পরিমাণ বেশি সে সমস্ত পুকুরে সহজে প্ল্যাঙ্কটন সৃষ্টি করা যায় না। কারণ এরা পুকুরের পানি ফিল্টার করে প্ল্যাংকটন কনা খেয়ে ফেলে এবং শামুক ও ঝিনুকের খোলস তৈরীতে প্রচুর পরিমানে ক্যাসিয়াম ব্যবহৃত হয়। তাই পুকুরের পানি সবসময় পরিষ্কার ও হালকা নীল রং এর দেখায়। এই সমস্ত পুকুরে প্ল্যাঙ্কটন সৃষ্টি করার জন্য সারেরর পরিমাণ বেশি দিতে হবে এবং তা ৩ দিন অন্তর অন্তর সূর্যের আলোতে প্রয়োগ করতে হবে, প্রাকৃতি খাদ্য সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত। প্রয়োগের আগে আরেকটি প্ল্যাঙ্কটন যুক্ত পুকুর থেকে বীজ হিসেবে ১০ - ১২ বালটি পানি সার প্রয়োগের পুকুরে দিতে হবে। নতুন করে পুকুর প্রস্তুতির সময় অবশ্যই ঝিনুক বা শামুক পুকুর থেকে সরাতে হবে। চাষকালিনী সময় ব্লাক কার্প ছাড়তে পারেন।
২.
পুকুরের
মাটি
এসিডিক
হলে
তার
প্রভাবে
পানির
pH
কম
থাকে।
আর
এই
কম
pH
এর
এসিটিক
প্রভাব
জনিত
কারণে
প্ল্যাঙ্কটন
সৃষ্টি
হতে
পারে
না।
পুকুর
প্রস্তুতকালীন
মাটির
pH
এর
উপর
ভিত্তি
করে
চুন
ও
জৈব
সার
মাটিতে
প্রয়োগ
করে
চাষ
দিতে
হবে।
এসিড
মাটি
ঠিক
করার
জন্য
প্রোবায়োটিক
প্রয়োগ
করা
যেতে
পারে।
৩.
এঁটেল
মাটি
হলে
পুকুরের
পানি
প্রায়
ঘোলা
থাকে
ঘোলা
পানিতে
সূর্যের
আলো
প্রবেশ
করতে
পারে
না।
তাই
সহজে
ঐ
সমস্ত
পুকুরে
প্রাকৃতিক
খাদ্য
সৃষ্টি
হয়
না।
পুকুর
প্রস্তুতিতে
মাটিতে
জৈব
সার
প্রয়োগ
করা
হলে,
পুকুরের
পানি
ঘোলা
হওয়ার
সম্ভাবনা
কম
থাকে।
৪.
পুকুরে
সূর্যের
আলো
না
পড়লে,
প্ল্যাঙ্কটন
সৃষ্টি
হতে
পারে
না।
পুকুর
নির্মাণ
এর
সময়
দিনের
বেশি
ভাগ
সময়
রোদ
পাওয়া
যায়
এই
রকম
স্থান
নির্বাচন
করতে
হবে।
পুকুর
পাড়ের
গাছের
ঢাল
কাটতে
পারেন।
৫.
পুকুরের
পানিতে
কার্বনেট
এর
ঘনত্ব
কম
হলে
প্ল্যাঙ্কটন
সৃষ্টিতে
বাধা
পায়।
পুকুরে
ক্যালসিয়াম
কার্বনেট
চুন
প্রয়োগ
করলে
সমস্যার
সমধান
হয়।
৬.
বেলে
মাটির
পুকুরে
মটিতে
পুষ্টি
কম
থাকে
এই
ধরণের
পুকুর
প্রস্তুতির
সময়
অধিক
পরিমানে
জৈব
সার
ব্যবহার
করে
এবং
উপরে
দোঁআশ
মাটির
একটি
স্তর
দিতে
পারলে
ভালো
ফল
পাওয়া
যায়।
পুকুরে প্রকৃতিক খাবার তৈরীর জন্য নিম্নোক্ত সার প্রয়োগ করা যেতে পারে
ক)
পুকুর প্রস্তুতির সময় জৈব সার প্রয়োগ:
১.
সরিষার খৈল ১০০ গ্রাম/শতাংশ,
২.
অটোপালিশ ১০০ গ্রাম/শতাংশ,
৩.
চিটাগুড় ১০০ গ্রাম/শতাংশ,
৪.
ইষ্ট এক চামচ/শতাংশ
অটোপালিশ,
চিটাগুড়, ইষ্ট আগের দিন একত্রে মিশিয়ে দ্বিগুন পরিমান পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে
ছেঁকে দ্রবণটুকু পুকুর/ঘেরের পানিতে ছিটিয়ে দিতে হবে। এভাবে পরপর ২ বার ব্যবহার করে
অটোপালিশ ও চিটাগুড়ের মিশ্রণ ফেলে দিতে হবে।
সরিষার
খৈল আগের দিন আলাদা ভাবে ভিজিয়ে রাখে পরদিন সকালে (রোদের সময়) পানির সাথে মিশিয়ে পুকুর/ঘেরে
ছিটিয়ে প্রয়োগ করুন।
এতে
৩-৪ দিনের মধ্যে পানির রং সবুজাভ/বাদামী সবুজ হবে, তা না হলে ১ম ডোজের ৩-৪দিন পর আবার
একই পারিমানে জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে।
খ)
চাষকালীন সময়ে সার প্রয়োগ :
১.
সরিষার খৈল ৫০-১০০ গ্রাম/শতাংশ,
২.
অটোপালিশ ৫০ গ্রাম/শতাংশ,
৩.
চিটাগুড় ৫০ গ্রাম/শতাংশ,
৪.
ইষ্ট ১/২ চামচ/শতাংশ
৫.
ইউরিয়া ১০০ গ্রাম/শতাংশ
৬.
টিএসপি ৭৫ গ্রাম/শতাংশ
অটোপালিশ,
চিটাগুড়, ইষ্ট আগের দিন একত্রে মিশিয়ে দ্বিগুন পরিমান পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে
ছেঁকে দ্রবণটুকু পুকুর/ঘেরের পানিতে ছিটিয়ে দিতে হবে। এভাবে পরপর ২ বার ব্যবহার করে
অটোপালিশ ও চিটাগুড়ের মিশ্রণ ফেলে দিতে হবে।
সরিষার
খৈল এবং টিএসপি আগের দিন আলাদা আলাদা ভাবে ভিজিয়ে রাখে পরদিন সকালে (রোদের সময়) এক
সাথে মিশিয়ে তার সাথে ইউরিয়া গুলে পুকুর/ঘেরে ছিটিয়ে প্রয়োগ করুন।
এতে
৩-৪ দিনের মধ্যে পানির রং সবুজাভ/বাদামী সবুজ হবে, তা না হলে ১ম ডোজের ৩-৪দিন পর আবার
একই পারিমানে জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে। রং হালকা হয়ে গেলে পুনরায় সার প্রয়োগ করতে হবে
(প্রতি ৭-১০ দিন পরপর)
Comments
Post a Comment